মধ্যমগ্রামে ভেজাল সিমেন্টসহ গ্রেপ্তার ৩, নামী কোম্পানির বস্তায় ভরা হত গঙ্গা মাটি

নামী কোম্পানির সিমেন্ট ভরতি বস্তা থেকে অর্ধেক মাল বার করে মেশানো হচ্ছে গঙ্গামাটি ও কারখানার ছাই। তারপর ফের কোনও নামী কোম্পানির ছাপ মারা বস্তায় ভরে সেই ভেজাল সিমেন্ট চলে যাচ্ছে খোলা বাজারে। বাইরে থেকে দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই—আসল না নকল। ভেজাল সিমেন্ট তৈরির কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এই জালচক্রের সন্ধান পেয়েছে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে এক ম্যাটাডোর ভরতি প্রায় ১০০ বস্তা ভেজাল সিমেন্টও রাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওইগুলি বাইরে বিক্রির নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১১টা নাগাদ মধ্যমগ্রামের রোহান্ডা এলাকা থেকে পুলিশ ওই ভেজাল সিমেন্ট ভরতি ম্যাটাডোরটিকে আটক করে। পুলিশের কাছে খবর ছিল, পাচারকারীরা এই রাস্তা দিয়ে ভেজাল সিমেন্ট বাজারে নিয়ে যাবে। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে, যারা এই কারবারে যুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা জেরায় ভেজাল কারবারের কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, এয়ারপোর্ট এলাকায় তাদের গোডাউন রয়েছে। সেখানে তারা আসল সিমেন্টের বস্তা খুলে গঙ্গামাটি ও কারখানার ছাই মেশায়। সেই সঙ্গে ডলোমাইট নামে এক ধরনের গুঁড়োও মেশানো হয়। অল্প টাকায় ওই গঙ্গামাটি ও ছাই কিনে এনে মজুত করে রাখা হয়।
ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, নামি সিমেন্ট কোম্পানির বস্তাও তারা জোগাড় করত। ভেজাল সিমেন্ট ভরে একেবারে আসল বস্তা সিল করার মতো সিল করে দিত। ওই নামি কোম্পানির সিমেন্টের যা বাজারদর তার চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি করত তারা। ক্রেতাদের বলা হত, ট্যাক্স ফ্রি। তাই দাম কম। কোনও বিল দেওয়া হবে না। তারই লোভে পড়ে অনেকে এই সিমেন্টের বরাত দিত। এছাড়া, কয়েকজন অসৎ ব্যবসায়ীও এই সিমেন্ট কিনে কারবার করত। এক পুলিশ অফিসার বলেন, এটা মারাত্মক অপরাধ। কারণ, সিমেন্ট দিয়ে বড় বড় কনস্ট্রাকশন তৈরি হয়। কিন্তু, তাতে যদি অর্ধেক গঙ্গামাটি ও ছাই থাকে তাহলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। তাই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালানো হয়েছিল। এয়ারপোর্টের যে এলাকায় ওই গোডাউনটি রয়েছে, স্থানীয় থানার সহযোগিতা নিয়ে সেখানেও তল্লাশি চালানো হবে। এই জালিয়াতি চক্রে যুক্ত বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। এর পিছনে কোনও মাথা রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

0 Comments

There are no comments yet

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =

Back to top