নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ (২০১৩ সনের ৪৩ নং আইন) – শেষ অংশ

প্রকৃত অপরাধীকে সনাক্তকরণে সহায়তা, ইত্যাদি-
৬৩। (১) এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘনজনিত কোন কার্যের সহিত কোন বিক্রেতার জ্ঞাতসারে সংশ্লিষ্টতা না থাকার বিষয়টি যদি সন্দেহাতীত ভাবে বোধগম্য হয় এবং প্রয়োজনবোধে উক্ত বিক্রেতা আইনের বিধান লঙ্ঘনকারীকে সনাক্তকরণে সহযোগিতা করিতে যদি প্রস্তুত থাকেন, তাহা হইলে এই আইনের অধীন অপরাধের জন্য দায়ী করিয়া তাহার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া আইনের বিধান লঙ্ঘণকারীকে সনাক্তকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে।

(২) কোন দোকান হইতে বিক্রিত কোন খাদ্যদ্রব্য দূষিত, ভেজাল, নকল বা ত্রুটিপূর্ণ হইবার ক্ষেত্রে যদি উক্ত খাদ্যদ্রব্য কোন বৈধ বা অনুমোদিত কারখানা, ফ্যাক্টরি বা প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত বা প্রস্তুত হইয়া থাকে এবং যদি সন্দেহাতীতভাবে বোধগম্য হয় যে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত বা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সহিত দোকানের মালিক বা পরিচালকের কোন সংশ্লিষ্টতা নাই এবং প্রয়োজনবোধে যদি উক্ত ব্যক্তি আইনের বিধান লঙ্ঘনকারীকে সনাক্তকরণে সহযোগিতা করিতে প্রস্তুত থাকেন, তাহা হইলে দোকানের মালিক বা পরিচালককে দায়ী করিয়া কোন ফৌজদারী বা প্রশাসনিক কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া আইনের বিধান লঙ্ঘনকারীকে সনাক্তকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে।

(৩) জীবিকা অর্জনের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করিয়া হকার বা ফেরিওয়ালা হিসাবে বিক্রয় করিলে এবং অনুরূপ বিক্রিত খাদ্যদ্রব্য যদি নকল, ভেজাল বা অন্য কোনরূপ ত্রুটিপূর্ণ হইয়া থাকে এবং উহার দ্বারা কোন খাদ্যভোক্তার স্বার্থ ক্ষুন্ন হইয়া থাকে, তাহা হইলে অনুরূপ কারণে যদি সন্দেহাতীতভাবে বোধগম্য হয় যে, তিনি অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে সজ্ঞানে বা যোগসাজশে অথবা জানিয়া শুনিয়া উহা খাদ্য ভোক্তার নিকট বিক্রয় করেন নাই এবং প্রয়োজবোধে যদি উক্ত হকার বা ফেরিওয়ালা বিধান লঙ্ঘনকারীকে সনাক্তকরণে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করিতে প্রস্তত থাকেন, তাহা হইলে উক্ত হকার বা ফেরিওয়ালাকে দায়ী করিয়া কোন ফৌজদারী বা প্রশাসনিক কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া আইনের বিধান লঙ্ঘনকারীকে সনাক্তকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে।

(৪) কাঁচা মৎস্য ও শাক-সবজির ন্যায় দ্রুত পচনশীল কোন খাদ্যদ্রব্য কোন হকার বা ফেরিওয়ালার নিকটি বা কোন দোকানে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কারণে পচিয়া যাওয়া অবস্থায় পাওয়া গেলে যদি ইহা সহজেই বোধগম্য হয় যে পচিয়া গিয়াছে জানিয়াও অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে সজ্ঞানে বা যোগসাজশে তিনি উহা খাদ্য ভোক্তার নিকট বিক্রয় বা বিক্রয়ের চেষ্টা করেন নাই তাহা হইলে উক্ত হকার, ফেরিওয়ালা বা দোকানদারকে দায়ী করিয়া কোন ফৌজদারী বা প্রশাসনিক কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পচনশীলতা প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে।

(৫) এই ধারার অধীন দায় হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আদিষ্ট বা অনুরুদ্ধ হইলে তাৎক্ষণিকভাবে নকল বা ভেজালের উৎস উদঘাটনের বিষয়ে এবং প্রয়োজনবোধে বিচার কার্যের সাক্ষী হিসাবে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।

প্রশাসনিক তদন্ত ও জরিমানাঃ

প্রশাসনিক তদন্ত পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা-
৭৮। (১) কোন ব্যক্তির খাদ্যের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকিলে তিনি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহা কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ উক্ত অভিযোগ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুসন্ধান বা তদন্ত পরিচালনার পর যে ব্যক্তি উক্ত খাদ্য প্রস্তুত, বিপণন বা বিক্রয় করিয়াছেন সেই ব্যক্তিকে তাহার করণীয় সম্পর্কে যথাযথ নির্দেশনা প্রদান করিবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন তদন্ত পরিচালনার জন্য কর্তৃপক্ষ উহার যে কোন কর্মকর্তাকে এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিযুক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তদন্ত কার্য পরিচালনা করিবেন এবং তৎসম্পর্কে একটি প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবেন।

(৫) এই ধারার অধীন দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন বিবেচনার পর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত বিষয়ে কোন ব্যক্তিকে কোন নির্দেশ প্রদান করা হইলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত নির্দেশ মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবেন এবং উক্তরূপ নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হইলে কর্তৃপক্ষ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত ব্যক্তির উপর অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।

(৬) উপ-ধারা (৫) এ যাহা থাকুক না কেন, এই আইনের ধারা ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৭ লংঘনের ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা যাইবে না।

(৭) কোন ব্যক্তি এই ধারার অধীন তাহার উপর আরোপিত প্রশাসনিক জরিমানা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে উহা চঁনষরপ উবসধহফং জবপড়াবৎু অপঃ, ১৯১৩ (অপঃ ওঢ ড়ভ ১৯১৩) এর অধীন সরকারি দাবী গণ্যে আদায়যোগ্য হইবে।

আপীল-
৭৯। কোন ব্যক্তি ধারা ৭৮ এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ হইলে, তিনি উক্ত আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, সরকারের নিকট আপীল দায়ের করিতে পারিবেন এবং সরকার উক্ত আপীল দায়েরের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ (২০১৩ সনের ৪৩ নং আইন) – সপ্তম অংশ
Back to top